![]() |
লিওনেল মেসি |
ফিফা ডটকম: আপনার ২০১৩ সালটা কেটেছে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে।
লিওনেল মেসি: হ্যাঁ, বছরটা সত্যিই একটু অদ্ভুত ছিল। লা লিগার কিছুটা সময়, চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের আগে শত ভাগ ফিট ছিলাম না। মৌসুম শুরুর কিছু সময়ও
খেলতে পারিনি। কাজেই, এটা বলতেই পারেন। হ্যাঁ, ইনজুরিটাই গত বছরে আমার বাধা হয়ে ছিল।
ফিফা: যে কোচরা আপনার সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁরা সবাই দুটো ব্যাপারে একমত হবেন: আপনি প্রচণ্ড মেধাবী আর ইনজুরির কারণে খেলতে না পারাকে আপনি ঘৃণা করেন। এই সময়টা কীভাবে সামাল দিলেন?
মেসি: সত্যি বলতে, এটা খুবই কঠিন ছিল। কিন্তু আমি আর্জেন্টিনায় চলে যাওয়ায় সাজঘর থেকে অনেক দূরে থাকতে পেরেছি। উত্তেজনা-অস্থিরতাগুলো দূরে রাখতে পেরেছি। এই দিক দিয়ে চিন্তা করলে এটা আমার জন্য অনেক ভালো হয়েছে। খারাপ লাগাগুলো বাদ দিলে, দুই মাস না খেলাটা আমার জন্য শারীরিকভাবে খুব ভালো ফল দিয়েছে। এখন এটার ইতিবাচক দিকগুলোই খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
ফিফা: যখনই রোজারিওতে যাওয়ার সুযোগ আসে, নিজের শহরের কোন ব্যাপারটা সবচেয়ে বেশি অনুভব করেন?
মেসি: সবকিছু! আমার বন্ধুবান্ধব, পরিবার। শুধু সেখানে যাওয়া, বাড়িতে থাকতে পারা; আর দীর্ঘদিন পরে বিষয়গুলো উপভোগ করতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে।
ফিফা: জনমানুষ এড়িয়ে সেখানকার রাস্তায় হাঁটতে পারেন?
মেসি: হ্যাঁ, বার্সেলোনায় যেমনটা পারি তেমনটা ওখানেও (হেসে)। না, না... আসলে আমি চেষ্টা করি এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে যাওয়ার। বন্ধু আর আত্মীয়দের বাড়ি। রাস্তায় তেমন একটা বের হই না।
ফিফা: বার্সেলোনার ম্যাচ টিভিতে দেখতে কেমন লাগে? এটা কি আপনাকে আরও বেশি উত্তেজিত করে তোলে?
মেসি: হ্যাঁ, অবশ্যই। মাঠে থাকার চেয়ে টেলিভিশনে খেলা দেখার সময় আমি বেশি উদ্বিগ্ন থাকি। মাঠে থাকলে তা-ও কিছু করার থাকে। কিন্তু বাইরে থাকলে কিছু করারও উপায় থাকে না। সেটা আরও খারাপ লাগে।
ফিফা: বিশ্বকাপের বছর হওয়ায় আপনার ফিটনেস নিয়ে মানুষের উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা কি আঁচ করতে পারেন?
মেসি: না। সত্যি বলতে খুবই ভারমুক্ত ছিলাম। ফিটনেসের জন্য কাজ করতাম আর তারপর বাড়িতে ফিরে আসতাম। এভাবেই কাটিয়েছি। সবকিছুই ভালোভাবে চলছিল। ছয় মাসের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে খুবই ভালো অবস্থায় আছি। আর্জেন্টিনায় থাকার সময়টা ভালোভাবেই কেটেছে। মানুষের সঙ্গে ভালো যোগাযোগ ছিল এটা অবশ্য বলতে পারব না, কারণ আমি সুস্থ হয়ে ওঠার দিকেই বেশি মনোযোগ দিয়েছিলাম। [আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে] যেখানে অনুশীলন করতাম, সেখানে কিছু দিন এমনকি ঘুমিয়েও গেছি।
ফিফা: কিন্তু আপনি কি একটুও চিন্তিত নন? সবকিছুর পরও, বিশ্বকাপের বছরটা সত্যিই বিশেষ কিছু। তাই না?
মেসি: হ্যাঁ, অবশ্যই। যদিও এখনো বেশ কয়েক মাস বাকি আছে আর মনে হচ্ছে এখনো বেশ খানিকটা দূরেই আছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হয়তো এটা কাছে চলে আসবে। কিন্তু তার আগে আমাদের সামনে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ আছে: চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়, লা লিগা, কোপা ডেল রের শিরোপা ধরে রাখা। আমরা সবকিছু ধাপে ধাপে নিতে চাচ্ছি। কিন্তু সত্যি কথা হলো, বিশ্বকাপের ভাবনা ইতিমধ্যেই আমাদের মাথায় চলে এসেছে।
ফিফা: সাম্প্রতিক ফর্ম, খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতা-বয়স সবকিছুর বিবেচনায় আর্জেন্টিনাকে এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিটের আসনে বসান হয়েছে। আপনি কি একমত?
মেসি: হ্যাঁ, হ্যাঁ... এটা সত্যি, আর আমরা এই মুহূর্তে ভালো ফর্মেই আছি। বাছাইপর্বে আমরা খুব একটা ভালো করতে পারছিলাম না। কিন্তু কলম্বিয়ার মাঠে গিয়ে জিতে আসার পর আমরা দারুণ একটা সময় পার করেছি। এটা আমাদের জন্য একটা বড় বাঁক ছিল। খুবই ইতিবাচকও বটে। আমাদের একঝাঁক ভালো খেলোয়াড় আছে আর তারা ভালো পারফরম্যান্সও দেখাচ্ছে। সত্যিই বছরটা আমাদের হতে পারে কিন্তু বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার পর যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। এটা খুবই কঠিন প্রতিযোগিতা। কিন্তু আমার মনে হয় যে আমরা সত্যিই ভালো ফর্মে আছি।
ফিফা: স্বাগতিক ব্রাজিলকে নিয়ে কথা বলি। ক্যারিয়ারজুড়ে দেশটির বিপক্ষে আপনি সব সময়ই ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়ে এসেছেন। গোল করেছেন, জয় পেয়েছেন। এর মধ্যে কোনো ম্যাচের কথা কী আপনার বিশেষভাবে মনে আছে?
মেসি: হ্যাঁ, অবশ্যই। আমি খুব স্পষ্টভাবে মনে করতে পারি অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের [২০০৫ সালে] কথা। সেমিফাইনালে তাদের ২-১ গোলে হারিয়েছিলাম। ম্যাচটা মনে আছে কারণ আমি সেই ম্যাচে একটা গোল করেছিলাম আর সেই জয়টা আমাদের ফাইনালে নিয়ে গিয়েছিল। আর এটাই আমার জেতা প্রথম দিককার শিরোপা। সত্যিই খুব সুখের স্মৃতি।
ফিফা: বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো এত অনন্য হয়ে ওঠে কেন?
মেসি: বিশ্বকাপের খেলাগুলো সম্পূর্ণই ভিন্ন ধরনের। শুরুর সময় থেকেই, বিশ্বকাপের পরিবেশ আর প্রস্তুতি অন্য যেকোনো প্রতিযোগিতার চেয়ে আলাদা রকমের থাকে
ভালোইতো
ReplyDelete